প্রাণী/প্রাণিবিদ্যা এবং শ্রেণি/শ্রেণিবিদ্যা
প্রাণী
কিন্তু প্রাণিবিদ্যা, প্রাণিতত্ত্ব, প্রাণিত। (প্রাণী,
ঈ-কার দিয়ে
লেখা হচ্ছে; কিন্তু
প্রাণিবিদ্যা, ই-কার
দিয়ে লেখা হচ্ছে)। আবার, শ্রেণি
লিখতে প্রথম ভুক্তিতে লিখেছে
শ্রেণি। ২য় ভুক্তিতে লিখেছে
শ্রেণী। এভাবে, শ্রেণিসংগ্রাম ও
শ্রেণীসংগ্রাম।
‘প্রাণী’ বানানে ঈ-কার লেখা
গেলে ‘শ্রেণি’ বানানে
ই-কার কেন?
ঈ-কার লেখা
যাবে না কেন?
রানি/রানী/রাণী এবং পরি/পরী
প্রমিত
বানানের নিয়মে উল্লেখ
করে হয়েছে,“সকল
অতৎসম শব্দে কেবল
ই এবং উ
এবং এদের চিহ্ন
ব্যবহৃত হবে।যেমনঃ বাঙালি,
ইংরেজি, উনিশ, আরবি।
তবে কোনো কোনো
স্ত্রীবাচক শব্দের শেষে
ঈ-কার দেওয়া
যেতে পারে। যেমনঃ
রানী, পরী, গাভী”। কিন্তু ‘রানি’
বানানের ভুক্তিতে প্রথমেই আছে
রানি, তারপরে আছে
রানী। অর্থাৎ ‘রানি’
বানানটিকে অধিকতর প্রমিত
বলে ধরা হয়েছে।
তাহলে, “কোনো কোনো
স্ত্রীবাচক শব্দের শেষে
ঈ-কার দেওয়া
যেতে পারে। যেমনঃ
রানী, পরী, গাভী”
এই নিয়মের কোন
যৌক্তিকতা থাকে বলে
মনে হয় না।
অপরদিকে, ‘পরি’ একটি
সংস্কৃত উপসর্গ। যেমনঃ
পরিশুদ্ধ, পরিমাণ, পরিণাম
ইত্যাদি। আর, ‘পরী’
শব্দটির অর্থ পক্ষবিশিষ্টা কল্পিত
সুন্দরী। আমি ব্যক্তিগতভাবে ‘পক্ষবিশিষ্টা কল্পিত
সুন্দরী’ অর্থে ‘পরি’
শব্দটি ব্যবহারের পক্ষে
নই; এই অর্থে
‘পরী’ শব্দটি ব্যবহারের পক্ষে।
খ্রিষ্ট /খ্রিস্ট // খ্রিস্টান/ খ্রিষ্টান
প্রমিত
বানানের নিয়মে উল্লেখ
আছে ,“তৎসম শব্দে
ট, ঠ, বর্ণের
পূর্বে ষ হয়।
যেমনঃ বৃষ্টি, দৃষ্টি,
নিষ্ঠা, পৃষ্ঠা। কিন্তু
বিদেশি শব্দে এই
ক্ষেত্রে স হবে।
যেমনঃ স্টল, স্টাইল,
স্টিমার, স্টুডিও, স্টেশন,
স্টোর, স্ট্রিট”।
“কিন্তু খ্রিষ্ট যেহেতু
বাংলায় আত্তীকৃত শব্দ
এবং এর উচ্চারণও হয়
তৎসম কৃষ্টি, তুষ্ট
ইত্যাদি শব্দের মতো,
তাই ষ্ট দিয়ে
খ্রিষ্ট শব্দটি লেখা
হবে”।
বিপরীতে, অভিধানে উল্লেখ
আছে ‘খ্রিস্ট’।
যুক্তি হিসেবে বলা
হয়েছে “পাঠ্যপুস্তকের বানানের সঙ্গে
সামঞ্জস্যপূর্ণ
থাকায় বানাটিকে অপরিবর্তনীয় রাখা
হয়েছে”। প্রশ্ন
হল, ‘পাঠ্যপুস্তক বোর্ড’
বাংলা একাডেমিকে অনুসরণ
করবে নাকি বাংলা
একাডেমি অনুসরণ করবে
‘পাঠ্যপুস্তক বোর্ড’ কে?
নিয়ম যদি ‘খ্রিষ্ট’ হয়
তবে অভিধানে ‘খ্রিস্ট’ লেখার
আদৌ দরকার আছে
কি? আমার মতে,
শব্দটি ইংরেজি থেকে
আগত। তাই এর
উচ্চারণ হওয়া উচিত
“খ্রিস্ট”; আত্তীকৃত আর
তৎসম শব্দ কৃষ্টি,
তুষ্ট এর সাথে
সামঞ্জস্যপূর্ণ
বলে ‘খ্রিষ্ট’ শব্দটি
গ্রহণ করার পক্ষে
নই। করণ, প্রমিত
বানানের নিয়মে উল্লেখ
আছে ‘ইংরেজি s এর
পরিবর্তে স হবে,
আর sh এর পরিবর্তে শ
হবে”। খ্রিস্টান ও
খ্রিষ্টান শব্দদুটির বেলায়ও
একই কথা প্রযোজ্য।
জ/য; জাদু/যাদু
জ/য; জাদু/যাদু
“বাংলায় প্রচলিত বিদেশি
শব্দ সাধারণভাবে বাংলা
ভাষার ধ্বনিপদ্ধতি অনুযায়ী লিখতে
হবে। যেমন—কাগজ,
জাহাজ, হুকুম, হাসপাতাল, টেবিল,
পুলিশ, ফিরিস্তি, হাজার,
বাজার, জুলুম, জেব্রা।
কিন্তু
ইসলাম ধর্ম-সংক্রান্ত কয়েকটি
বিশেষ শব্দে ‘যে’ د ,
‘যাল’ ذ , ‘যোয়াদ’ ض , ‘যোই’ ظরয়েছে , যার ধ্বনি
ইংরেজি z-এর মতো,
সেক্ষেত্রে উক্ত আরবি
বর্ণগুলোর জন্য য
ব্যবহৃত হওয়া সঙ্গত।যেমন— আযান, ওযু, কাযা, নামায, মুয়াযযিন, যোহর, রমযান। তবে
কেউ ইচ্ছা করলে
এই ক্ষেত্রে য-এর পরিবর্তে জ
ব্যবহার করতে পারেন।
জাদু, জোয়াল, জো ইত্যাদি শব্দ
জ দিয়ে লেখা
বাঞ্ছনীয়”।
নামায,
রমযান, শব্দগুলো ফারসি
শব্দ।
অভিধানে দেখানো
হয়েছে ‘জাদু’ ও
‘যাদু’ শব্দদুটি ফারসি
শব্দ হতে আগত।
তাদের অর্থও একই।
যেমনঃ
কুহক, মায়া, তন্ত্রমন্ত্র, আকর্ষণ;
উপভুক্তি হলঃ জাদুকর
ও যাদুকর, জাদুবিদ্যা ও
যাদুবিদ্যা। কিন্তু ‘জাদুগর’ থাকলেও
‘যাদুগর’ উপভুক্তি নেই
কেন? জাদুঘর আছে
কিন্তু যাদুঘর নেই
কেন?
দুটোই
বিদেশি, অর্থও এক,
ইংরেজি শব্দও এক
দেখানো হয়েছে (ম্যাজিশিয়ান)।
তাহলে উপভুক্তিতে ভিন্নতা কেন?
ব্যবহারিক অভিধানে, নামায,আযান,রমযান,
ওযু, যোহর শব্দগুলো লেখা
হয়েছে নামাজ, আজান,রমজান,অজু
জোহর। নিয়ম অনুযায়ী ‘য’
ব্যবহার করার কথা
থাকলে, ‘জ’ ব্যবহার করা
হয়েছে কেন?
এ / অ্যা
“বিদেশি শব্দে
বিকৃত বা বাঁকা
উচ্চারণে অ্যা ব্যবহৃত হবে।
অ্যান্ড (and), অ্যাবসার্ড, অ্যাসিড, ক্যাসেট, ব্যাক,
ম্যানেজার, হ্যাট, অ্যাটর্নি, অ্যাকাউন্ট,অ্যাটম”।
তাহলে,
‘একাডেমি’ উচ্চারণ কেন
অ্যাকাডেমি হলো না?
বিভ্রান্তিঃ
নিয়মে
যাই বলা হোক
না কেন অভিধানে অ্যাকাডেমি ও
একাডেমি শব্দদুটি অন্তর্ভুক্ত করা
হয়েছে।ফলে, বিভ্রান্তি আরও
বেড়েছে। (১৮ তম
সংস্করণ ৭৭ পৃষ্ঠা)।
প্রমিত
বানানের নিয়মে উল্লেখ
করা হয়েছে
“তবে কিছু
তদ্ভব এবং বিশেষভাবে দেশি
শব্দ রয়েছে যার
অ্যা-কারযুক্ত রূপ
বহুল পরিচিত। যেমনঃব্যাঙ, চ্যাঙ,
ল্যাঙ, ল্যাঠা। এসব
শব্দে অ্যা অপরিবর্তিত”।
অন্যদিকে বাংলা
একাডেমি তার ‘পরিমার্জিত সংস্করণের মুখবন্ধ ও
ব্যবহারবিধি’ তে উল্লেখ
করেছে “কোন শব্দের
একাধিক বানান থাকলে
সুপ্রচলিত ও নির্বাচিত বানানবিশিষ্ট শব্দটি
সর্বপ্রথম এবং অন্যান্য বানানবিশিষ্ট শব্দগুলো উক্ত
মানানুযায়ী পরস্পর কমাসহ
লিখতে হবে”।
কিন্তু
বাংলা একাডেমি তার
অষ্টাদশ সংস্করণের ১০৬০
পাতায় উল্লেখ করেছে
‘লেঠা, ল্যাঠা, লেটা’;
অর্থাৎ প্রথম ভুক্তি
হল লেঠা। তাহলে
প্রশ্ন জাগে, কেন
নিয়মে ‘ল্যাঠা’ থাকবে
? আর অভিধানে কেন
‘লেঠা’ থাকবে? প্রথমেই ‘লেঠা’
উল্লেখ করে বাংলা
একাডেমি ‘ল্যাঠা’ বানানের নিয়মকে
অগ্রাহ্য করেছে।
একইভাবে এসেছে
চ্যাং, চেঙ, চ্যাঙ
। তাহলে কোনটি
শুদ্ধ? ‘চ্যাঙ’ অধিকতর
শুদ্ধ হলে তা
ভুক্তিতে পূর্বে উল্লেখ
করা হয়নি কেন?
স /শ
ইংরেজি শব্দের ক্ষেত্রে প্রতিবর্ণ হল
ইংরেজি শব্দের ক্ষেত্রে প্রতিবর্ণ হল
s = স
sh= শ
sion= শ
ssion =শ
tion =শ
তাহলে
প্রশ্ন থাকে, slogan শব্দটির উচ্চারণ ‘স্লোগান’ হওয়ার
কথা থাকলেও ‘শ্লোগান’ও
উল্লেখ করা হয়েছে
কেন?
ণত্ব-বিধি ও ভিন্নমত
“অতৎসম শব্দের
যুক্তাক্ষরের বানানের ক্ষেত্রে কমিটির
সদস্যগণ একমত হতে
পারেন নি। একটি
মতে বলা হয়েছে
যে, এসব শব্দের
যুক্তাক্ষরে ণ্ট, ণ্ঠ,
ণ্ড, ণ্ঢ হবে।
যথাঃ ঘণ্টা, লণ্ঠন,
গুণ্ডা। অন্যমতে বলা
হয়েছে যে, এসব
শব্দের যুক্তাক্ষরে ন্ট,
ন্ঠ, ন্ড, ন্ডহ
হবে। যথাঃ ঘণ্টা,
প্যান্ট, প্রেসিডেন্ট, লন্ঠন,
গুন্ডা, পান্ডা, ব্যান্ড, লন্ডভন্ড”।
এখানে ঘণ্টা, লণ্ডভণ্ড শব্দগুলো সংস্কৃত শব্দ। শব্দগুলো কীভাবে অ-তৎসম শব্দের বানানে অন্তর্ভুক্ত হলো এটাই এক বিরাট বিস্ময় !! এসব শব্দ তৎসম বলেই ণত্ব বিধানের নিয়মানুসারে মূর্ধন্য হবে। যেমনঃ ঘণ্টা, লণ্ঠন, গুণ্ডা।
এখানে ঘণ্টা, লণ্ডভণ্ড শব্দগুলো সংস্কৃত শব্দ। শব্দগুলো কীভাবে অ-তৎসম শব্দের বানানে অন্তর্ভুক্ত হলো এটাই এক বিরাট বিস্ময় !! এসব শব্দ তৎসম বলেই ণত্ব বিধানের নিয়মানুসারে মূর্ধন্য হবে। যেমনঃ ঘণ্টা, লণ্ঠন, গুণ্ডা।
গুণ্ডা
শব্দটি সংস্কৃত গুণ্ড
থেকে আগত {√গুণ্ড+অ(ঘঞ+
বা. গুণ্ডা)।
অপরদিকে লন্ঠন
(শব্দটি ইংরেজি lantern থেকে এসেছে),
ব্যান্ড,প্যান্ট, প্রেসিডেন্ট, বলে দন্ত্য-ন হবে।
একইভাবে, গভর্নর, গভর্নমেন্ট, লন্ড্রি ইত্যাদি হবে।
পাণ্ডা এর অর্থ
তীর্থস্থানের পূজারি। শব্দটি এসেছে
সংস্কৃত ‘পণ্ডিত’ থেকে।
তাই এখানে মূর্ধন্য হবে।
কিন্তু পাণ্ডা (panda) শব্দটির আরেকটি
ব্যুৎপত্তি এসেছে নেপালি
পাণ্ডা শব্দ থেকে।এর অর্থ
হল ‘চীনের বনাঞ্চলে জাত
কচি বংশদণ্ডভোজী এক
প্রকার সংবেদনশীল ভালুকজাতীয় বিরল
প্রজাতির প্রাণী’।
তাই এই প্রাণী
বোঝাতে দন্ত্য-ন
লিখতে হবে। যেমনঃ
পান্ডা। কারণ, বিদেশি
শব্দে ণত্ব বিধি
খাটে না।
নাই/নেই/না/নি –নঞ্চর্থক অব্যয়
২০১২
সালে প্রণীত বানানের নিয়মে
বলা হয়েছে “না-বাচক না
আলাদা এবং নি
সমাসবদ্ধ হিসেবে ব্যবহৃত হবে।
যেমনঃ করি না
কিন্তু করিনি”
ব্যবহারিক অভিধানের (২০১৫
সংস্করণের অষ্টাদশ) উল্লেখ
করা হয়েছে “নাই,
নেই, না, নি
নঞর্থক অব্যয় পদগুলি
শব্দের শেষে যুক্ত
না হয়ে পৃথক
থাকবে”। যেমনঃ
বলে নাই, যায়
নি, পাব না,
তার মা নাই,
আমার ভয় নেই।
অনেকের
মতো আমিও ‘যায় না’
আলাদাভাবে এবং ‘যায়নি’
একসাথে লেখার পক্ষপাতী।
আঙ্গিনা/আঙিনা এবং বাঙালি/বাঙ্গালি
আঙ্গিনা/আঙিনা এবং বাঙালি/বাঙ্গালি
অঙ্গ
শব্দটি এসেছে সংস্কৃত অঙ্গ
থেকে। {স. অঙ্গ+অ(অচ)}
অঙ্গন
শব্দটিও এসেছে সংস্কৃত অঙ্গ
থেকে। {স. অঙ্গ
+অন(ল্যুট)}
আবার,
বঙ্গ শব্দটি এসেছে
সংস্কৃত ‘বঙ্গ’ থেকে।
{স.বঙ্গ}
উভয় ক্ষেত্রে মূল সংস্কৃত শব্দ (অঙ্গ ও বঙ্গ)। উভয় ক্ষেত্রেই ‘ঙ্গ’ আছে। তাই, অঙ্গ ও বঙ্গ বানানটি এভাবেই এসেছে।
উভয় ক্ষেত্রে মূল সংস্কৃত শব্দ (অঙ্গ ও বঙ্গ)। উভয় ক্ষেত্রেই ‘ঙ্গ’ আছে। তাই, অঙ্গ ও বঙ্গ বানানটি এভাবেই এসেছে।
কিন্তু
ব্যবহারিক অভিধানে ‘আঙ্গিনা’ শব্দটি
এভাবে উল্লেখ আছে;
আঙ্গিনা, আঙিনা, আঙ্গন।
শব্দটি এসেছে সংস্কৃত অঙ্গন
থেকে {স. অঙ্গন>}
। অর্থাৎ অঙ্গ+ন= অঙ্গন।
অপরদিকে, বাঙালি
শব্দটির ভুক্তিতে উল্লেখ
আছে ‘বাঙালি, বাঙালী’। উৎস সংস্কৃত {স.
বঙ্গ > + আলি/আলী}
।
এখানেও
উভয় ক্ষেত্রে মূল সংস্কৃত শব্দ
(অঙ্গ ও বঙ্গ)। উভয় ক্ষেত্রেই ‘ঙ্গ’
আছে।
কিন্তু
প্রমিত বানানে ‘আঙ্গিনা’ শুদ্ধ
হলে ‘বাঙ্গালি’ প্রমিত
হবে না কেন?
এমন
দ্বৈত নীতি কেন?
দারিদ্র/দারিদ্র্য ; চিন্তা, অচিন্ত্য
দারিদ্র বানানটি দেখতে
গিয়ে লক্ষ করালাম
“দারিদ্র=> দারিদ্র্য”, এভাবে
দেওয়া আছে।
দারিদ্র্য=> দারিদ্র শব্দটির ভুক্তি
দেওয়া হয়েছে এভাবে।
অর্থাৎ গ্রহণযোগ্য দুটি
শব্দই; অথচ প্রমিত
বানানে বলা হয়েছে
“দারিদ্র্য” শুদ্ধ।
আবার,
চিন্তা
শব্দটি এসেছে সংস্কৃত চিন্তি
হতে। {স. √চিন্তি+অন(ল্যুট)}
চিন্তন
শব্দটিও এসেছে সংস্কৃত চিন্তি
হতে। {স. √চিন্তি+অন(ল্যুট)}
চিন্তিত {স.
চিন্তা}
কিন্তু,
অচিন্তনীয় শব্দে য-ফলা ব্যবহৃত না
হলেও কেন ‘অচিন্ত্য’ বানানে
য-ফলা ব্যবহৃত হবে
? ‘চিন্তমান’ অশুদ্ধ কেন?
কেন লেখা হবে
‘চিন্ত্যমান’?
অনিন্দ্য/নিন্দনীয়/অনিন্দনীয়
অনিন্দ্য , নিন্দনীয় , অনিন্দনীয় বানানে
য-ফলা নেই।
কিন্তু ‘অনিন্দ্য’ বানানে
য-ফলা থাকবে
কেন? কেন এমন
ভিন্নতা ? এসব বাংলা
একাডেমিকেই পরিষ্কার করতে
হবে।
হল/হলো
বাংলায়
‘হল’ শব্দটির তিনটি
অর্থ আছে।
১।
লাঙল।
২।
কামড়া, প্রশস্ত ঘর।
{ই. Hall} শহিদুল্লাহ হল,
শের-এ-বাংলা
হল।
৩।
সমাধান , মোচন, করা
অর্থে (সমাপ্ত করা)
। সমাপ্ত হল।
করা হল। নিয়োগ
করা হল।
ক্রিয়া
সম্পাদনা অর্থে ‘হল’
কে আমি “হলো’
লেখার পক্ষপাতী। এতে
বিভ্রান্তি কমবে। যেমনঃ
সমাপ্ত করা হলো,
নিয়োগ করা হলো।
এতে hall এবং completed এর অর্থ
ভালভাবে প্রকাশ পাচ্ছে।
হত/হতো
হত/হতো
ব্যবহারিক অভিধানের কোথাও
‘হইত’ (চলিত রূপ
‘হতো’) পাওয়া যায়
নি।
যেমনঃ
কাজ করা হইত,
পরিশ্রম করা হইত,
টাকা প্রদান করা
হইত ইত্যাদি বাক্যগুলোকে চলিত
ভাষায় লেখা যায়
এভাবে কাজ করা
হত, পরিশ্রম করা
হত, টাকা প্রদান
করা হত।
কিন্তু, সমস্যা হলো ‘হত’ শব্দের অর্থ নিহত, মৃত, বধপ্রাপ্ত, ব্যাহত, লুপ্ত ইত্যাদি। এই বিভ্রান্তি দূর করার জন্য হইত অর্থে ‘হতো’ লেখা অধিকতর যুক্তিযুক্ত বলে মনে হয়। যেমনঃ কাজ করা হতো, পরিশ্রম করা হতো, টাকা প্রদান করা হতো ইত্যাদি।
উপর/ ওপর
ব্যবহারিক অভিধানে ‘ওপর’ শব্দটি খুঁজে পেলাম না। বড়ই অদ্ভুত!
কিন্তু, সমস্যা হলো ‘হত’ শব্দের অর্থ নিহত, মৃত, বধপ্রাপ্ত, ব্যাহত, লুপ্ত ইত্যাদি। এই বিভ্রান্তি দূর করার জন্য হইত অর্থে ‘হতো’ লেখা অধিকতর যুক্তিযুক্ত বলে মনে হয়। যেমনঃ কাজ করা হতো, পরিশ্রম করা হতো, টাকা প্রদান করা হতো ইত্যাদি।
উপর/ ওপর
ব্যবহারিক অভিধানে ‘ওপর’ শব্দটি খুঁজে পেলাম না। বড়ই অদ্ভুত!
ধারণ/ধারণা
আশ্চর্যের বিষয়,
বাংলা একাডেমি ব্যবহারিক অভিধান(অষ্টাদশ পুনর্মুদ্রণ) খুঁজে
‘ধারণ’, ‘ধারণা’ শব্দদুটি পাওয়া
যায়নি। ৬৩৭ পৃষ্ঠায় ধরন
এর উপভুক্তি হিসেবে
‘ধরন-ধারণ’ যুক্ত
করা হয়েছে।
বাংলা একাডেমি এরকম আরও উদ্ভট নিয়ম ও বিভ্রান্তিতে রেখেছে আমাদের। এসবের একটা ইতি টানা উচিত। শুধু কয়েকটি অভিধান রচনা আর সাময়িকী প্রকাশ করে দায়িত্ব শেষ করলে বাংলা ভাষায় চলমান নৈরাজ্য বন্ধ যাবেনা। এজন্য প্রয়োজন পরিকল্পিত, বিজ্ঞানসম্মত যৌক্তিক বিশ্লেষণ এবং সমন্বয়করণ; প্রয়োজন সমন্বিত প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন। এজন্য বাংলা একাডেমিকেই দায়িত্ব নিতে হবে।
বাংলা একাডেমি এরকম আরও উদ্ভট নিয়ম ও বিভ্রান্তিতে রেখেছে আমাদের। এসবের একটা ইতি টানা উচিত। শুধু কয়েকটি অভিধান রচনা আর সাময়িকী প্রকাশ করে দায়িত্ব শেষ করলে বাংলা ভাষায় চলমান নৈরাজ্য বন্ধ যাবেনা। এজন্য প্রয়োজন পরিকল্পিত, বিজ্ঞানসম্মত যৌক্তিক বিশ্লেষণ এবং সমন্বয়করণ; প্রয়োজন সমন্বিত প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন। এজন্য বাংলা একাডেমিকেই দায়িত্ব নিতে হবে।